নয়াভাঙনীর ভাঙনে বিলুপ্তের পথে শতবর্ষী মাজার

স্রোত নেই বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলার নয়াভাঙনী নদীতে। দীর্ঘদিন ধরে চলছে না ভারি নৌযান। তবুও হঠাৎ করে দেবে গেছে নদী তীরের উপজেলার কাজিরচর ইউনিয়নের দক্ষিণ পূর্ব কাজিরচর গ্রামের আইনুদ্দীন শাহ মাজার এলাকাসহ প্রায় পাঁচশ’ ফুট জায়গা।

এতে করে প্রায় দেড়শ’ বছরের পুরোনো আইনুদ্দীন শাহের মাজার ও শতবর্ষী মেলা বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আজ বুধবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, নয়াভাঙনী নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলনের ফলে নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে করে ওই এলাকার শতাধিক পরিবারের মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

দক্ষিণ পূর্ব কাজিরচর গ্রামের বাসিন্দা আমিন উদ্দীন বেপারী বলেন, সোমবার বিকেল পর্যন্ত আইনুদ্দীন শাহ’র মাজার এলাকায় ভাঙনের চিহ্ন দেখা যায়নি। মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ করে প্রায় পাঁচশ’ ফুট জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

এভাবে ভাঙন দেখা দেওয়ায় নদী তীর এলাকার শতাধিক পরিবারের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি পরিবার তাদের বাড়ি-ঘর সরিয়ে নিয়েছেন।

ফজল হাওলাদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নয়াভাঙনী নদী দিয়ে লঞ্চ, জাহাজ, কার্গো চলাচল করে না। নদীতে বর্ষা মৌসুম ছাড়া তেমন একটা স্রোত দেখা যায় না। এরপরেও নদীতে ভাঙন দেখা দেওয়ায় তারা চরম আতঙ্কিত হয়ে পরেছেন।

তিনি আরও বলেন, কয়েকদল বালু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

আইনুদ্দীন শাহ মাজারের খাদেম ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, মাজারটি প্রায় দেড়শ’ বছরের পুরনো। সেখানে প্রায় ১৪০ বছর ধরে ভক্তরা মেলা করছেন। আকস্মিক নদী তীরের প্রায় পাঁচশ’ ফুট দেবে যাওয়ায় মাজারের অনেকাংশ ভেঙে গেছে। পাশাপাশি মেলা বসানো নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কাজিরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মন্টু বিশ্বাস বলেন, নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় ভাঙনরোধ করা যাচ্ছে না। বালু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

মুলাদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, নয়াভাঙনী নদীতে অভিযান চালিয়ে একাধিকবার ড্রেজার জব্দ, বালু ব্যবসায়ীদের জরিমানা ও কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *