উন্নয়ন ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
উন্নয়ন ও মানবাধিকার যেন একসঙ্গে চলতে পারে তা নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনের হাইকমিশনার ভলকার তুর্ককে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, সরকার প্রতিটি নাগরিকের মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বুধবার রাজধানীর তেজগাঁও এ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ভলকার তুর্ক জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের কাজ এবং ঢাকায় তার সফরকালে সরকারের উপদেষ্টা, সেনাবাহিনী প্রধান, সংস্কার কমিশনের প্রধান, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার বৈঠক সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। তিনি বলেন, ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত নৃশংসতার তদন্ত করছে। আশা করছি ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হবে। এছাড়াও জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান বিপ্লবের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত করা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের কাজ এবং দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থবহ সংস্কারের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত সংস্কার কমিশন সম্পর্কেও আলোচনা করেন। তিনি বলেন, এমন অনেক বিষয় আছে যা ঠিক করা দরকার। স্বৈরাচারী সময়ে জোরপূর্বক শত শত গুমের ঘটনা তদন্তে গঠিত তদন্ত কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এবং আমার কার্যালয় তদন্ত কমিশনকে সহায়তা করছে। এ সময় তিনি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে ‘স্বাধীন’ এবং ‘সম্পূর্ণ কার্যকরী’ করে আরও শক্তিশালী করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানান। বলেন, তার অফিস তদন্ত কমিশনকে সহায়তা বাড়িয়েছে। বলেন, ঢাকায় তার উপস্থিতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা আরও শক্তিশালী হয়েছে। তিনি জানান, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর ঢাকায় তাদের উপস্থিতি জোরদার করতে চায়। প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারকে বাংলাদেশ সফর করার জন্য এবং বিপ্লবের সময় তার সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আপনার সফরে খুশি। তারা আপনার কাছে কৃতজ্ঞ। ড. ইউনূস জানান, তার সরকার বিগত সরকারের মতো ভুল এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি করবে না। এ সময় তারা রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও কথা বলেন। বিশেষ করে মিয়ানমারে সহিংসতার কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা কয়েক হাজার রোহিঙ্গার আগমন নিয়ে। তুর্ক রোহিঙ্গাদের জন্য আরও আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং সংকট সমাধানে অব্যাহত প্রচেষ্টার আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য সেইফ জোন তৈরি করতে জাতিসংঘের সহায়তা চান। যাতে এই অঞ্চলের অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষ তাদের নিজ অঞ্চলের কাছাকাছি থাকতে পারে। তারা দুজনই এই আঞ্চলিক সমস্যাটির দ্রুততম টেকসই সমাধানের জন্য ‘কিছু গতিশীল উদ্যোগ’ নেয়ার প্রচেষ্টার কথা জানান এবং এক্ষেত্রে আসিয়ানের জোরালো ভূমিকার আহ্বান জানান।