সংবিধানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তাড়াহুড়ো নয়
প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ক্ষমতাচ্যুত সরকারের দোসরদের রেখে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বিএনপির পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। সরকারকে আরও সতর্ক হয়ে কাজ করতে হবে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও সংবিধানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাড়াহুড়ো না করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর লেডিস ক্লাবে আয়োজিত শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, মাফিয়া সরকারের রেখে যাওয়া ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে মেরামত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে। ১৫ বছরের জঞ্জাল ভেদ করে সংস্কার কার্যক্রম অবশ্যই বিশাল কর্মযজ্ঞ। তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি জনগণের প্রতিদিনের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করা না গেলে, জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার বিষয়টি উপেক্ষিত থাকলে সংস্কার কার্যক্রম প্রশ্নের মুখে পড়বে। তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এজেন্ডা নির্ধারণ করা অত্যন্ত জরুরি।তারেক রহমান বলেন, মাফিয়া সরকারের পলায়নের পর তাৎক্ষণিক পরিস্থিতিতে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহল ছাড়াও বর্তমানে সরকারের মধ্যে নানা রকম ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ চলছে। বর্তমান পর্যায়ে এসে গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে এ ধরনের বিতর্ক সরকারের গতিশীলতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, তথাকথিত সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু নয়, এ জাতিরাষ্ট্রের আমাদের একটাই পরিচয় আমরা বাংলাদেশি। নাগরিক হিসেবে আপনার যতটুকু অধিকার, আমারও ঠিক ততটুকুই অধিকার। নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে পরাজিত শক্তি দেশে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি সৃষ্টি করত। সারাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের একটি ঘটনারও বিচার করেনি তারা।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল। আওয়ামী লীগ ব্যর্থ নেতৃত্বের কারণে সুষ্ঠু দেশ গড়ে তুলতে পারেনি। গত ১৫ বছরে এই দল দেশ ধ্বংস করে দিয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিজয়ের ধারাবাহিকতা যাতে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করব।
বিএনপির ধর্মবিষয়ক সহসম্পাদক অমলেন্দু দাস অপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, উপদেষ্টা তপন মজুমদার, মহাসচিব তরুণ দে প্রমুখ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।